হোমিওপ্যাথি হল নিরাপদ, মৃদু এবং নিরাময়ের প্রাকৃতিক ব্যবস্থা যা রোগীর লক্ষণগুলি থেকে মুক্তি দিতে, রোগীকে পুনরুদ্ধার করতে এবং রোগীর সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে রোগীর দেহের সাথে কাজ করে।
এতে কোন রোগের চিকিৎসা করা হয় না, রোগীর চিকিৎসা করা হয়। রোগ একটি নাম যা আমরা কিছু টেস্টের মাধ্যমে যান্ত্রিক উপায়ে নির্ণয় করা হয়। অপরদিকে রোগী বলতে বুঝায় আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে প্রাপ্ত সকল লক্ষণ। হোমিওপ্যাথিতে শুধু রোগের চিকিৎসা করা হয় না রোগী হতে প্রাপ্ত সকল লক্ষণের উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা করা হয়। উদাহরন স্বরুপ বলা যায়, কোন ব্যক্তির জ্বর হয়েছে উক্ত জ্বরে রোগীর দেহে প্রাপ্ত লক্ষণ সমূহ হিসেবে রোগীর গায়ের তাপমাত্রা বৃদ্ধি, অস্থিরতা, পিপাসা, গাত্র বেদনা দেখা যায়। এক্ষেত্রে রোগের নাম হিসেবে চিকিৎসা করলে জ্বরের চিকিৎসা করা হবে এবং দেহের তাপমাত্রা নিরসণের চেষ্টা করা হবে কিন্তু রোগীর দেহে প্রাপ্ত অন্যান্য লক্ষণ সমূহকে প্রাধান্য দেয়া হবে না। এ দিকে তাপমাত্রা নিরসন হতে গিয়ে দেখা গেল রোগীর মাথা ঘোরা ও দূর্বলতা দেখা যায় যা রোগীকে সম্পূর্ণ সুস্থ না করে বরং আরো অন্য লক্ষণের সৃষ্টি করলো।
কিন্তু হোমিওপ্যাথিতে রোগীকে চিকিৎসা করা হয় রোগীর প্রাপ্ত সকল লক্ষনের
উপর ভিত্তি করে। উপরে যে লক্ষণ সমূহের কথা বলা হয়েছে সকল লক্ষণের উপর ভিত্তি করে রোগীকে
একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক এমন ঔষধ নির্বাচন করবেন যে ঔষধের রোগীর দেহে প্রাপ্ত লক্ষণ
পুনরায় সৃষ্টি করতে পারে। ঔষধ নির্বাচনের পর ঔষধের শক্তি নির্বাচন করবেন যা রোগীর প্রাপ্ত
লক্ষণের চেয়ে মৃদু নয় এবং খুব বেশী শক্তিশালী হয় তাও নয়। শক্তি হতে হবে প্রাপ্ত লক্ষণের
তুলনায় সামান্য বেশী। শক্তি মৃদু হলে তা রোগীর লক্ষণ দ্বারা পরাজিত হবে আবার অধিক শক্তিশালী
হলে রোগীর জীবনীশক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হবে যা রোগীর রোগ লক্ষণকে আরো বৃদ্ধি করবে। এখন ঔষধ
প্রয়োগের পর ঔষধ রোগীর দেহে প্রবেশ করে পূর্বে সৃষ্ট সমলক্ষণ সমূহ পুনরায় তৈরী করে।
প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট লক্ষণ সমূহ থেকে ঔষধ দ্বারা সৃষ্ট লক্ষণ সমূহ কিছুটা শক্তিশালী
হওয়ায় ঔষধ দ্বারা সৃষ্ট লক্ষণ সমূহ প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট লক্ষণের স্থান দখল করে কিন্তু
তখনও রোগী আরোগ্য লাভ করে নাই রোগীর দেহে সকল লক্ষনই দেখা যায়, তখন রোগীর দেহের লক্ষণ
সমূহ কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে যা বুঝতে হবে ঔষধের সৃষ্ট লক্ষণ সমূহ এ সময় অন্য কোন
ঔষধ প্রয়োগ করা যাবে না। ঔষধের ক্রিয়াকাল শেষ হওয়ায় সাথে সাথে রোগীর দেহের লক্ষণ সমূহও
দুরীভূত হতে থাকবে। ফলে রোগী আরোগ্য লাভ করবে।
এতে দেখা যায় রোগীর
অন্য কোন অতিরিক্ত লক্ষণের সৃষ্টি হয় নাই এবং ঔষধের ক্রিয়াকাল কম হওয়ায় রোগী দ্রুত
আরোগ্য লাভ করছে।
তাই হোমিওপ্যাথিকে সমধর্মী
চিকিৎসা ব্যবস্থাও বলা হয়ে থাকে।